কোন পিল সবচেয়ে ভালো ২০২৪

অনেকে নতুন বিয়ে করে দেরিতে সন্তান নেওয়ার জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে পিল ব্যবহার করে থাকেন। মূলত গর্ভাবস্থা প্রতিরোধে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল মহিলারা ব্যবহার করে থাকেন। জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলে বিদ্যমান থাকে সিন্থেটিক হরমোন। যার বিভিন্ন স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে এবং গর্ভাবস্থা প্রতিরোধে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রোজেস্টিন ও ইস্ট্রোজেন সংমিশ্রণ থাকে ফলে মহিলাদের শরীরে দ্রুত কাজ করে। 


কোন পিল সবচেয়ে ভালো


বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের জন্মবিরতিকরণ পিল কিনতে পাওয়া যায়। এবং বর্তমানে চতুর্থ প্রজন্মের কিছু পিল বাজারে এসেছে। যেগুলো সম্পূর্ণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত এবং ওজন বাড়ার মতো সমস্যা তৈরি হয় না। কোন পিল সবচেয়ে ভালো এ প্রশ্নটি যাদের রয়েছে তাদের আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে হবে।


    জন্ম নিয়ন্ত্রণ কোন পিল সবচেয়ে ভালো

    কিছুদিন আগে ও হাতের নাগালে ফেমিকন, মিনিকন, সুখী পাওয়া যেত। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই বিলগুলো ছিল খুবই সহজলভ্য এবং কম দামের। তাই এটি মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্তদের হাতের নাগালে ছিল। কিন্তু এগুলো তে দেখা দেয় বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। তাই এখন উচ্চবিত্ত সহ মধ্যবিত্তরাও এই ধরনের পিলগুলো ব্যবহার করা থেকে সতর্ক হচ্ছেন। 


    বর্তমানে বাজারে যেসব চতুর্থ প্রজন্মের পিল এসেছে সেগুলো প্রায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত। কিন্তু পিল সেবন করার প্রথম তিন মাস শরীরে কিছু পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। তবে এই পিল গুলোর দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় সব শ্রেণীর মানুষ ক্রয় করতে পারেন না। চলুন এক নজরে দেখে নেই জন্ম নিয়ন্ত্রণ কোন পিল সবচেয়ে ভালো? 


    মারভেলন‌ পিল

    এইট পিলটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম হলো নুভিস্তা ফার্মাসিটিক্যালস। মুখে খাওয়ার জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী এই পিলটির মূল্য ৬০ টাকা। এক পাতায় মোট ২১ টি ট্যাবলেট থাকে। প্রথম কয়েকদিন খাওয়ার পর মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। এখন তবে কিছুদিনের মধ্যেই এই সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে।


    কনরেনা আর পিল

    জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য বর্তমানে এই পিলটি খুবই জনপ্রিয়। রেনাটা লিমিটেড এ ঔষধটি বাজারজাত করে থাকে। বর্তমানে এ ঔষধের বাজার মূল্য ১৫ টাকা। বাংলাদেশের প্রায় সব ফার্মেসিতে এটি এভেলেবল থাকে।


    নরেট ২৮

    এই পিলটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম হল পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। যারা বাচ্চা নিতে চান না তারা পিরিয়ড শুরু হওয়ার ২ দিন পর থেকে ঔষধটি দিয়ে খাওয়া শুরু করবেন। এবং বাচ্চা না নেওয়ার আগ পর্যন্ত ঔষধ চালিয়ে যেতে হবে। এক পাতা ঔষধে ২৮ টি ট্যাবলেট থাকে। এবং ২৮ টি ট্যাবলেটের মূল্য ২৩.৪২ পয়সা।


    অভোস্টাট গোল্ড

    এই পিলে বিদ্যমান রয়েছে লাইনেসট্রেনল ও ইথিনাইল এস্ট্রাডিয়েল উপাদান। এবং এর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম হলো নভিস্তা ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড। সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকে ঔষধ টি খাওয়া শুরু করতে হয়। এবং বাচ্চার নেওয়ার আগ পর্যন্ত ওষুধটি চালিয়ে যেতে হবে। শুরুতে হালকা রক্তপাত এবং মাথা ঘোরার সমস্যা তৈরি হতে পারে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।


    নভেলন লাইট

    এই ওষুধের রয়েছে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সেগুলো হল: ইথিনাইল ইসট্রাদিওল এবং ড্রসপিরেনন, যা মহিলাদের হরমোনের পরিবর্তন ঘটায়। প্রথমে হালকা গোলাপি রঙের ট্যাবলেট গুলো দিয়ে খাওয়া শুরু করতে হবে। টানা ২৪ দিন ঔষধটি খেয়ে ২৫ দিনের দিন থেকে চার দিন ওষুধটি বন্ধ রাখতে হবে। এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকলেও কিছুদিনের মধ্যে শরীরের সাথে সহজেই মিশে যায়।


    উপরে প্রদত্ত পিল গুলো বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে খুবই সমাদৃত। আপনার শরীরের সাথে উপরের পিল গুলোর মধ্যে যে পিলটি মানানসই হয় সেটি খাওয়া অব্যাহত রাখতে পারেন।


    জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

    জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কয়েকটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও তা কয়েক দিনের মধ্যেই কমে যায়। জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হল:


    ● যোনি থেকে হালকা রক্তপাত,

    ● বমি বমি ভাব,

    ● ক্রমান্বয়ে ওজন বৃদ্ধি,

    ● স্তনে হালকা বা তীব্র ব্যথা,

    ● মুড সুইং,

    ● শ্রবণশক্তির সমস্যা,

    ● হালকা মাথাব্যথা।


    এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো সাধারণ মাত্রায় থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যদি দেখেন যে সমস্যাগুলো সহ্য সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।


    জন্মনিয়ন্ত্রণে কার জন্য কোন পদ্ধতি ভালো

    যারা নবদম্পতি এবং দেরিতে সন্তান নিতে যাচ্ছেন তাদের জন্য সবথেকে ভালো পদ্ধতি হলো হরমোনাল পদ্ধতি। এটিকে আমরা পিল হিসেবে চিনে থাকি। নব দম্পতিরা যদি বিয়ের তিন বছর পরে সন্তান গ্রহণ করতে চান তাহলে ইমপ্লান্ট পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য তিন মাস অন্তর অন্তর ইনজেকশন এর ব্যবস্থা রয়েছে। 


    যারা দীর্ঘদিন যাবত পিল খাওয়ার চিন্তা করছেন তারা ফোর্থ জেনারেশনের মুখে খাওয়ার পিল গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন। যেসব দম্পতিরা একটি সন্তানের পিতা-মাতা তারা পরবর্তীতে সন্তান দেরিতে নেওয়ার জন্য লোড পিল সেবন করতে পারেন। এতে করে শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাবে। তবে এর একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হল অনিয়মিত মাসিক।


    ৩৫ বছরের উপরে যে সব মহিলা রয়েছেন তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুই সন্তানের মা হয়ে থাকেন। এবং পরবর্তীতে সন্তান গ্রহণের আকাঙ্ক্ষা তাদের কম থাকে। এই বয়সে মহিলাদের যদি ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকে তাহলে তারা পিল এবং ইনজেকশন গ্রহণ করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে তাদের জন্য সবথেকে নিরাপদ পদ্ধতি হলো কপার-টি এবং যেকোনো স্থায়ী একটি পদ্ধতি। 


    তবে যারা কম বয়সের পুরুষ এবং মহিলা রয়েছেন তারা বিভিন্ন ধরনের স্থায়ী পদ্ধতি যেমন: নারীদের জন্য লাইগেশন এবং পুরুষদের জন্য ভ্যাসেকটমি গ্রহণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন জন্মনিয়ন্ত্রণে কার জন্য কোন পদ্ধতি ভালো।


    শেষ কথা

    আমাদের আজকের পোস্টে কোন পিল সবচেয়ে ভালো এবং পিল গুলোর নাম ও তাদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করেছি। যেকোনো পিল সেবনের পর শরীরে বিরূপ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সেই পিলটি গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। তাই কোন পিল সেবন শুরু করার আগে অবশ্যই একজন গাইনি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। এবং আপনার শরীরে কোন সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া পিল গ্রহণ করবেন না।


    সর্বাধিক জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী


    বাচ্চা বুকের দুধ খেলে কি ইমার্জেন্সি পিল খাওয়া যাবে কি?

    উত্তর: বাচ্চা বুকের দুধ পান করলে লেভোনোগ্যাস্ট্রল (LNG-ECP) এই পিলটি খাওয়া যেতে পারে।

    সবচেয়ে দামি জন্মনিয়ন্ত্রণ কোনটি?

    উত্তর: সবচেয়ে দামি জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের নাম হলো মিরেনা এবং প্যারাগার্ড।

    জন্মনিরোধক পিলের দাম কত?

    উত্তর: ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ
    * Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.