ক্রিয়েটিনিন হলো প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত বর্জ্য, যা আমাদের গৃহীত খাবারের অংশ হিসেবে প্রোটিন গ্রহণ করে উৎপাদিত হয়। প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়ায় সব বর্জ্য প্রসাবের সাথে ফিল্টারিং হয়। এটি সাধারণত রক্তের মাধ্যমে কিডনিতে পৌঁছায়।
কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে না পারলে মানব শরীরে ক্রিয়েটিনিন তৈরি হয়। বিভিন্ন কারণে দিন দিন ক্রিয়েটিনিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো: উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ, ইউরিন ইনফেকশন ইত্যাদি। মাংসপেশির ক্রিয়েটিনিন ফসফেট ভেঙ্গে তৈরি হওয়া ক্রিয়েটিনিন নির্দিষ্ট অনুপাতে তৈরি হয়।
এর জৈবিক পদার্থ গুলো পাকস্থলীতে তৈরি হয়। এবং সরাসরি পেশিতে পৌঁছায় শক্তি সরবরাহ করার জন্য। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় সম্পর্কে। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:
সিরাম ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায়
একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে সিরাম ক্রিয়েটিনিন এর স্বাভাবিক মাত্রা হলো ০.৭ থেকে ১.২। আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার ক্ষেত্রে সিরাম ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা হলো ০.৬ থেকে ১.১।
যাদের সিরাম ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা বেশি তাদের কিছু খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। চলুন দেখে নেই সিরাম ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় গুলো কি কি?
● খাদ্য তালিকায় পালং শাক এবং পুঁইশাক রাখবেন না,
● কলা এবং কামরাঙ্গা খাওয়া বাদ দিন,
● ধনেপাতা ক্রিয়েটিনিন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে,
● ক্রিয়েটিনিন রোগীদের আম এবং কাঁঠাল খাওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে,
● কচু এবং মিষ্টি আলো খাদ্য তালিকায় রাখবেন না।
ক্রিয়েটিনের রোগীরা খাদ্য তালিকা পাশাপাশি একজন ডাক্তারের পরামর্শে থাকা উচিত।
ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ
সাধারণত কিডনিতে বিভিন্ন সমস্যা থাকলে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। কিডনি ঠিকঠাক মত কাজ করছে কিনা তা বোঝার জন্য ক্রিয়েটিনিন চেক করতে হয়। ক্রিয়েটিনিষ এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি না হলে একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। চলুন এক নজরে দেখেনি ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি?
● অধিক মাত্রায় বমি বমি ভাব,
● খুদা কম পাওয়া,
● বারবার প্রস্তাবের বেগ আসা,
● ক্লান্তি,
● পা ফুলে যাওয়া,
● শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি,
● চোখের নিচের অংশে ফুলে যাওয়া,
● সম্পূর্ণ মুখ, হাতের কব্জি, পেটের চারপাশে ফুলে যাওয়া,
● ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা,
● প্রসাবের এর পরিমাণ পরিবর্তন হওয়া,
কোন ব্যক্তির শরীরে এসব লক্ষণ প্রকাশিত হলে বুঝতে হবে ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেছে। আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি?
ক্রিয়েটিনিন কমানোর হোমিও ঔষধ
ক্রিয়েটিনিন কমানোর হোমিও ঔষধ |
ব্যবহার |
এপিস মেলিফিকা |
অতিরিক্ত মাথা ব্যথা,
ঘাম হওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, চামড়া ফুটো হয়ে যাওয়া, তৃষ্ণার্ত থাকা
ইত্যাদি চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। |
আর্সেনিকাম |
অতিরিক্ত তৃষ্ণাবোধ,
ফ্যাকাসে ত্বক, প্রস্রাবের রং পরিবর্তন হওয়া ইত্যাদি চিকিৎসার ব্যবহৃত হয়। |
অরাম মুরিয়াটিকাম |
কিডনির পাথর নিরাময়,
এবং প্রদাহ দূর করতে ব্যবহৃত হয়। |
বেলাডোনা |
কিডনি যেখানে অবস্থান
করে তার চারপাশের ব্যথা কমাতে ব্যবহৃত হয়। |
ক্যান্থারিস |
নেফ্রাইটিস নিরাময়ে
এই ওষুধটি বেশ জনপ্রিয়। |
কোনাভ্যালারিয়া |
কিতনে জনিত কারণে যদি
হৃদপিণ্ড ভালোভাবে কাজ না করে তাহলে এই ঔষধটি ব্যবহৃত হয়। |
ক্রিয়েটিনিন কমানোর খাবার তালিকা
কিডনির ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায়
উপসংহার
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
কি কি কারনে রক্তে ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যায়?
উঃ অধিক মাত্রায় প্রোটিন গ্রহণ করলে রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা বাড়ে। এক্ষেত্রে লাল মাংস এড়িয়ে চলা ভালো।
ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কত কিডনি ব্যর্থতার লক্ষণ?
উঃ ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা ৫.০ মিলিগ্রাম কিডনি ব্যর্থতার লক্ষণ।
ক্রিয়েটিনিন বাড়ায় কোন ভিটামিন?
উঃ ভিটামিন ডি জাতীয় সব ধরনের খাবার ক্রিয়েটিনিন বাড়াতে সাহায্য করে।